আমাদের শরীরের সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই খুবই গুরুত্বপূর্ণ তবে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হার্ট বা হৃদপিণ্ড। বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশ ও পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের অধিকাংশ মানুষ হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান। এর জন্যই হার্টকে নিয়েই আমাদের ভাবনা থাকে বেশি। তাই হার্ট সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে চলছে নানা ধরনের গবেষণা, শত শত বছর ধরে চলা এসব গবেষণা উঠে এসেছে বিভিন্ন উপায়।
যেনে নিতে পারেন সেরা ৬ টি উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করছি যেগুলো মেনে চললে সুস্থ থাকবে আপনার দেহের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হৃদপিণ্ড বা হার্ট।
হার্ট সুস্থ রাখার ৬ টি উপায়
দূষিত বায়ু এরিয়ে চলুন
যাদের হার্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য শীতকাল খুব ভয়াবহ হতে পারে। আবহাওয়া বিদদের তথ্য মতে সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বে দূষিত বায়ুর পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছে। শীতকালে সকালের দিকে বাতাসে দূষিত পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকে, সাধারণত বাতাসে থাকা অতিরিক্ত ধাতব পদার্থ নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে স্কন্ধদেশের ধমনি প্রাচীরকে আরো পুরু করে তোলে।
যে কারণে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয় আর রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হলে হার্টের সমস্যা হতে পারে। তাই আপনার যদি আগে থেকে হার্টের সমস্যা থাকে তাহলে দূষিত বায়ু এরিয়ে চলা আপনার জন্য মঙ্গল জনক, আর যদি হার্টের সমস্যা না থাকে তাহলেও দূষিত বায়ু এরিয়ে চলার চেষ্টা করবেন।
শাক সবজি খাওয়া
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যাদের খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন অন্তত দু-একটি শাকপাতা থাকে, তাদের হৃৎপিণ্ড অন্যদের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি সবল থাকে। তাই শাকাহারী হয়ে উঠতে উৎসাহ জুগিয়েছেন গবেষকরা। রঙিন সবজি বা তরিতরকারির প্রতি আগ্রহ বাড়ান।
কেননা কমলা বা সবুজ রঙের প্রতিটি সবজি আপনার রক্তচাপকে অনিয়মিত প্রবাহের হাত থেকে সুরক্ষা দেবে, যা হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতার জন্যও বেশ উপকারী। এছাড়াও আলু কিংবা কলাই-জাতীয় খাবার ও গুটিযুক্ত ফলধারী সবজি যেমন শিম, বরবটি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় এগুলো রাখতে পারেন ওষুধ বিবেচনায়ও।
সামাজিক যোগাযোগ রাখা
একাকিত্ব থাকা বা বাস করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা অন্যদের তুলনায় বেশি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে থাকে। তাই অন্যদের সঙ্গে কথা বলুন, হাত মেলান, জড়িয়ে ধরুন এবং আরো বেশি সামাজিক হতে চেষ্টা করুন নিজের স্বার্থেই। হৃৎপিণ্ড ভালো রাখতে নিয়মিত সবার সাথে কথা বলতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, দলবদ্ধ সংগীত কিংবা কারাওকে হাসিখুশি রাখে হৃদযন্ত্রকেও।
হাসিখুশি থাকতে হবে
হাসিখুশি আর প্রাণবন্ত মুখাবয়ব শুধু স্টাইল বা ফ্যাশন আইকনই আপনাকে করে তুলবে না, বাড়িয়ে দেবে আপনার নীরোগ থাকার প্রবণতাও। সব সময় হাসিখুশি থাকতে হবে, নিজের মনকে সতেজ আর মেজাজ কে ফুরফরা রাখতে হবে। নিজেকে বিশ্বাস করাতে হবে যে আমি ভালো আছি, দুর চিন্তা করা যাবেনা।
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রাণবন্ত উপস্থিতি আপনার অবসাদ ও অভ্যন্তরীণ প্রদাহকে ছুটি দিয়ে দেবে এবং অলিন্দ ও নিলয়ের প্রকোষ্ঠকে সুঠাম রাখবে। তাই আপনি যদি নিজের মস্তিষ্ক সুখি রাখতে পারেন তাহলে সুস্থ্য থাকবে আপনার হার্ট।
নেশা কে না বলুন
নেশা সহ বিভিন্ন এনার্জি ড্রিংকস ও শক্তিবর্ধক পানীয়কে শত্রু হিসেবে গণ্য করুন। কেননা এসব পানীয় কোনোভাবেই আপনার কোনো ধরনের উপকারে আসবে না। উল্টো রক্তচাপ বাড়িয়ে মুহূর্তেই আপনাকে ধসিয়ে দেবে। আপনারা যারা ধুমপান করেন তারা অবশ্যই জানেন সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে লেখা থাকে ধুমপান হৃদরোগের কারণ।
সহজ এই বিষয়টি জানার স্বত্বেও আপনি ধুমপান করছেন? মানে নিজে জেনে বুঝে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাই আপনি যদি একজন ধুমপায়ি হয়ে থাকেন তাহলে আপনার হার্ট কে সুস্থ্য রাখতে আজ থেকেই ধুমপান ত্যাগ করুন। আর যদি আপনার হার্টের সমস্যা থাকে তাহলে তো ভুল করেও মাদক সেবণ করা থেকে বিরত থাকুন।
নিয়মিত ঘুমানো
বর্তমানে আমাদের দেশের তরুণ তরুনীরা রাত ২-৩ টার পর্যন্ত জেগে থাকে এবং সকাল ১০-১২ পর্যন্ত ঘুমায়! রাত জাগার অভ্যাস যদি আপনার থাকে তাহলে জেনে রাখুন, আপনি অন্যদের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বেশি হার্ট এটাকের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন।
তাই চেষ্টা করবেন প্রতিদিন রাত ১২ টার আগে ঘুমানোর এবং সকাল ৬ টার বা তার আগে ওঠা এবং কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমাবেন। অনেকেই হয়তো বলবেন রাত ২-৩ পর্যন্ত জেগে অভ্যাস হয়ে গেছে, এখন চাইলেও আগে আগে ঘুমাতে পারিনা। তাই প্রয়োজন অনুযায়ী ঘুমের জন্য প্রতিদিন বেশি বেশি শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। সারাদিন পরিশ্রম করার পর শরীর ক্লান্ত হয়ে যাবে, আর শরীর ক্লান্ত থাকলে বিছানায় শুয়ার পর পরই ঘুমাতে পারবেন।
আরো পড়ুন
ইন্টারনেট তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত সকল বিষয়াবলী জানতে ভিজিট করতে পারেন https://projuktibuzz.com
0 Comments